মেজর ডালিম বাংলাদেশের ইতিহাসের না বলা সত্যকে জানুন

 

 

 
 
..ডালিম বলছি
..যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি
..জীবন বৃত্তান্ত
..সমসাময়িক ভাবনা
..প্রকাশিত বইসমগ্র
..কিছু কথা কিছু ব্যাথা
..ইংরেজী ভার্সন    
 

আর্মি এবং রক্ষীবাহিনীর প্রতি শেখ মুজিবের মনোভাব

 
   
 

 

জেনারেল শফিউল্লাহর ১৯৮৭ সালে ২৮শে আগষ্ট লন্ডনের বাংলা সাপ্তাহিক জনমত-কে দেয়া সাক্ষাৎকার যেটা পরে ৩রা সেপ্টেম্বর ১৯৮৭ সালে স্থানীয় দৈনিকগুলিতে প্রকাশিত হয়েছিল তাতে শেখ মুজিবের সেনাবাহিনী এবং রক্ষীবাহিনীর প্রতি তার মনোভাবের বিশদ প্রতিফলন ঘটে।

প্রশ্ন: আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সম্পর্ক নাকি ততটা ভালো ছিল না। কথাটা কি সত্য বলে আপনি মনে করেন?
উত্তর: আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যক্তিগতভাবে আমার উপর আস্থা ছিল। কিন্তু পুরো সামরিক বাহিনীর উপর তাদের আস্থা ছিল কিনা তাতে সন্দেহ আছে।

প্রশ্ন: স্বাধীনতার পর আপনাকে কেন চীফ অব স্টাফ নিযুক্ত করা হল?
উত্তর: এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ওসমানী সাহেবের কোন সিদ্ধান্ত নয়।

প্রশ্ন: রক্ষীবাহিনী গঠন করার আগে আওয়ামী লীগ সরকার এ ব্যাপারে কি আপনার সঙ্গে কোন আলাপ-আলোচনা করেছিল?
উত্তর: না। তবে গঠন করার পর আমাকে বলা হয়েছিল রক্ষীবাহিনী গঠন করা হয়েছে পুলিশ বাহিনীর সহযোগী শক্তি হিসাবে। তবে লোকমুখে আমি শুনেছি যে, রক্ষীবাহিনী গঠন করা হচ্ছে আর্মড ফোর্সের জায়গা পূরণের জন্য।

প্রশ্ন: সামরিক বাহিনীর সাথে রক্ষীবাহিনীর সম্পর্ক কেমন ছিল?
উত্তর: সম্পর্ক ভালো ছিল না। তার কতগুলো কারণ ছিল। তখন গুজব ছড়িয়েছিল যে, রক্ষীবাহিনীকে আর্মির জায়গায় বসানো হবে। নতুন বাহিনী হিসাবে রক্ষীবাহিনীকে তখন সবকিছুই নতুন জিনিষপত্র দিয়ে সাজানো হচ্ছিল। এদিকে আর্মি দেখছে তাদের সেই পুরাতন অবস্থা। এগুলো দেখে আর্মড ফোর্সের অনেকের মনে আঘাত লাগে। যার ফলে সম্পর্কটা খারাপ রূপ নেয়। তবে এ ব্যাপারে সরকার একটা ভুল করেছিলেন, তা হল রক্ষীবাহিনীকে ‘power of arrest and search’ দেওয়া। এতে সামরিক বাহিনীর অনেকেই ক্ষুব্ধ এবং চিন্তিত হন। শুধু তাই নয়; রক্ষীবাহিনী এই সময় সেনাবাহিনীর অনেক অফিসারকে লাঞ্ছনা পর্যন্ত করে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল রক্ষীবাহিনীর ক্ষমতা সেনাবাহিনীর চেয়েও বেশি।

প্রশ্ন: শেখ মুজিবর রহমান সামরিক বাহিনীর উন্নতির পক্ষে ছিলেন না, এ কথা কি সত্য?
উত্তর: হ্যাঁ। আমি বলবো একথা সত্য।
প্রশ্ন: গাজী গোলাম মোস্তফার সাথে লেডিস ক্লাবে মেজর ডালিমের অপ্রীতিকর ঘটনার পর সেনাবাহিনীর চীফ অব স্টাফ হিসাবে কি কোন কিছু করার চেষ্টা করেছিলেন?
উত্তর: যখন গোলমালের খবর আমি জানতে পারি তখন ডালিমের পক্ষ হয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে যাই এর একটা বিচারের জন্য। বঙ্গবন্ধু আমার উপর রেগে গেলেন। তখন আমি বললাম, ‘বঙ্গবন্ধু আমি যদি আমার অফিসারদের জন্য না বলি তাহলে কে বলবে? গাজী গোলাম মোস্তফার এই ঘটনা আপনি তদন্ত করে দেখুন। আপনি যদি এ ব্যাপারে সাহায্য চান তাহলে আমি আপনাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত আছি। যেহেতু ওরা গাজীর বিরুদ্ধে এবং আমিও তাদের পক্ষে, তাই গাজীর বিরুদ্ধেই বলেছি। তাই তিনি খুব খুশী হননি। তিনি শুধু বললেন, ‘শফিউল্লাহ, আপনি জানেন কি যে আপনি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলছেন? (ইংরেজি ভাষায়) আমি বললাম, ‘আমি জানি স্যার। আমি আমার জন্য কথা বলছি না; আমি কথা বলছি আপনার জন্য স্যার। মানুষ আপনাকে সত্য বলেনি। ঐ সময় জিয়া ও সাফায়াত জামিলও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রশ্ন: তারপর কি হল?
উত্তর: তারপর আমরা ওখান থেকে কোন বিচার না পেয়ে মনঃক্ষুন্ন হয়ে চলে আসি। পরে দেখা গেল সরকার মেজর ডালিমকে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করলেন।

 
 
 
     
     
  Design & Developed By: Hemu
All Rights Reserved 2008 @www.majordalimbangla.net