মেজর ডালিম বাংলাদেশের ইতিহাসের না বলা সত্যকে জানুন

 

 

 
 
..ডালিম বলছি
..যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি
..জীবন বৃত্তান্ত
..সমসাময়িক ভাবনা
..প্রকাশিত বইসমগ্র
..কিছু কথা কিছু ব্যাথা
..ইংরেজী ভার্সন    
 

রাষ্ট্রপতি আমাদের চাকুরী থেকে অবসর দিয়ে আমাদের প্রতি তার ন্যায় বিচার করলেন।

 
   
 

 

রাষ্ট্রপতি ৯নং আদেশ বলে ৮জন সামরিক অফিসারকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। নূর ও আমিও ছিলাম তাদের মধ্যে।

মাসখানেক পর জুলাই মাসের শের্ষাধে এক সন্ধ্যায় আমার বাসায় একটা র্পাটি ছিল। নিমন্ত্রিত অতিথিরা প্রায় সবাই এসে গেছে। বাইরে ইলশেগুড়ির বৃষ্টি হচ্ছে। হুদা ভাবীও এসে গেছেন কিন্তু হুদা ভাইয়ের পাত্তা নেই। বেশ একটু দেরি করেই এলেন কর্নেল হুদা। ভীষণ শুকনো তার মুখ। অস্বাভাবিক গম্ভীর তিনি। এসে সবার সাথে কুশল বিনিময় করে এককোনায় গিয়ে বসলেন তিনি। বোঝা যাচ্ছিল, কারো সাথে কথাবার্তা বলার তেমন একটা ইচ্ছে নেই তার। সদা উচ্ছল হুদা ভাই এত নিরব কেন? ব্যাপারটা খুবই অস্বাভাবিক ঠেকলো। এক ফাঁকে কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
-কি হয়েছে হুদা ভাই? কোন অঘটন ঘটেনিতো?
-না কিছু না।
নিজেকে কিছুটা হালকা করে নেবার জন্য ড্রিংকসের গ্লাসটা হাতে তুলে নিলেন তিনি। নিম্মী অতিথিদের আপ্যায়নে ব্যস্ত। হঠাৎ হুদা ভাই নিম্মীকে ডেকে পাশে বসালেন। প্রশ্ন করলেন,
-আচ্ছা নিম্মী ধর এমন একটা খবর তুমি পেলে যার ফলে তোমার এই সুন্দর সাজানো সংসারটা ওলট-পালট হয়ে গেল, তোমাদের এই সুখ কেউ কেড়ে নিল তখন কি করবে?
নিম্মী অবাক বিস্ময়ে হুদা ভাইকে ভালো করে দেখে নিয়ে বলল,
-আজ আপনার কি হয়েছে হুদা ভাই? কী সব এলমেলো বলছেন কিছুই বুঝতে পারছি না। বলেন না কি হয়েছে? আমিও এরি মধ্যে তাদের সাথে যোগ দিয়েছি।
-ডালিম ঢাকা থেকে কোন খবর পেয়েছ? জিজ্ঞেস করলেন কর্নেল হুদা।
-নাতো। তেমন কিছু হলে নিশ্চয়ই পেতাম। প্লিজ হুদা ভাই রহস্য বাদ দিয়ে বলেন না কি হয়েছে? ব্যাপার কি?
-যা হবার নয় তাই হয়েছে। Presidential Order No-9 (PO-9) প্রয়োগ করে আর্মি থেকে ৮জন অফিসারকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তুমি এবং নূরও রয়েছো এই ৮ জনের মাঝে। খবরটা অপ্রত্যাশিত; তাই হজম করতে কিছুটা সময় লাগল। নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে নিম্মীকে ডেকে বললাম,
-জান, take it easy. নিজেকে সামলে নাও। Don’t get upset and spoil the party. Let this be over then we shall think about it. Now be brave as you have allways been and act like a good host ok? মেয়ে মানুষ তার উপর ভীষণ স্পর্শকাতর এবং কোমল প্রকৃতি নিম্মীর। তবুও সেদিন অতিকষ্টে সব কিছুই সামলে নিয়েছিল সে। অতিথিদের কেউই কিছু বুঝতে পারেনি কি অঘটন ঘটে গেছে ইতিমধ্যে। খবরটা তখন পর্যন্ত কেউ জানত না। পার্টি শেষে একে একে অভ্যাগতদের সবাই বিদায় নিয়ে চলে গেল। থেকে গেলেন শুধু হুদা ভাই ও ভাবী। ভাবীকে খবরটা দেয়া হল। খবরটা জেনে ভাবী ভেঙ্গে পড়লেন। আমাদের অত্যন্ত স্নেহ করতেন তিনি। নিম্মীও আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলো না;  ক্ষোভে-কান্নায় জড়িয়ে ধরল ভাবীকে। আমি ও হুদা ভাই দু’জনে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম। হুদা ভাই বললেন,
- Come on now both of you hold yourselves, this is not the end of the world. Allah is there and He is great. Please stop crying and think what should be done.
নীলু ভাবী কাঁদছেন আর হুদা ভাইকে বলে চলেছেন,
- Gudu you must do something about this injustice. You have to do whatever nessesary. This is simply outrageous you must not take this lying noway get this very clear.নিলু ভাবীর আন্তরিকতায় মন ভরে গেল।
- I got it Nilu I got it, please comedown. I promise you I shall go out of myway to redress this. Nimmi you too please stop crying, don’t you have faith on your Huda Bhai? আমাকে বললেন,
-কাল তোমাকে নিয়ে আমি ঢাকায় যাব এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করব। নিম্মী তুমিও যাবে আমাদের সাথে। ঠিক সেই মুহুর্তে ঢাকা থেকে ফোন এল। নূর বলল,
- Sir. we have been sacked under PO-9. We need your presence here as soon as possible. জবাব দিলাম,
-আমি এবং হুদা ভাই কালই আসছি। টেলিফোন রেখে দিলাম। পরদিন ব্রিগেডের সবাই খবরটা জেনে গেল। কর্নেল হুদা সকালেই CO’s conference call করলেন। সেখানে তিনি বললেন,
-ডালিম এবং আমি ঢাকায় যাচ্ছি। I can assure you all that I personally shall do everything to redress this shocking injustice. এ ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে আমার অসন্তোষও কম নয়।

ঢাকায় এলাম আমরা। আর্মি হেডকোয়াটার্স এ চরম উত্তেজনা। শফিউল্লাহ অফিসে নেই। তিনি নাকি অসুস্থ। জেনারেল জিয়া আমি এসেছি জানতে পেরে ডেকে পাঠালেন। গিয়ে ঢুকলাম তার অফিসে। তিনি সিট থেকে উঠে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। স্বল্পভাষী লোক। বললেন,
- Have faith in Allah. He does everything for the better. This is just the beginning and I am sure manymore heads will roll.
-দোয়া করবেন স্যার। ঠিকই বলেছেন সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছাতেই ঘটে। বললাম আমি।
-We must keep-in touch and you can count on me for everything just as before. For any personal need my doors are always open to you.
-Thank you very much Sir, You are most kind. But you must remain alert as you are our last hope. Future will say what is there in our common destiny.
MS branch থেকে PO-9 এর লিখিত অর্ডারটা নিয়ে বেরিয়ে এসেছিলাম আমি ও নূর সেনা সদর থেকে। Retirement order টা যখন হাতে নিচ্ছিলাম তখন মনে পড়েছিল শেখ সাহেব স্বস্নেহে নিম্মীকে বুকে জড়িয়ে ধরে কথা দিয়েছিলেন সুবিচার করবেন তিনি। সেই সুবিচারের ফলেই আজ আমি চাকুরিচ্যুত হলাম বিনা কারণে!

সেদিনই সন্ধ্যায় আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে কর্নেল হুদা গিয়ে হাজির হলেন ৩২নং ধানমন্ডিতে। অতি পরিচিত সবকিছুই। কিন্তু এবারের আসাটা কিছুটা ভিন্ন প্রকৃতির তাই পরিবেশটা কিছুটা অস্বস্তিকর। রেহানা, কামাল সবাই কেমন যেন বিব্রত! পরিবেশটাকে হালকা করার জন্য বললাম,
-কি কামাল বিয়ের দাওয়াত পাবোতো? আমার প্রশ্নে লজ্জা পেয়ে কামাল উত্তর দিল,
-কি যে বলেন বস! আমি নিজে গিয়ে আপনাকে ও নিম্মীকে দাওয়াত করে আসব। আপনাদের ছাড়া বিয়েই হবে না। রেহানা চা-নাস্তা নিয়ে এল। হুদা ভাই চুপ করে বসে সবকিছু দেখছিলেন। বাসায় ফিরে এলেন শেখ সাহেব। ডাক পড়ল আমাদের তিন তলার অতিপরিচিত ঘরেই। একাই বসে ছিলেন শেখ সাহেব। ঘরে ঢুকে অভিবাদন জানাবার পর কর্নেল হুদা বললেন,
-এতবড় অন্যায়কে মেনে নিয়ে চাকুরি করার ইচ্ছে আমারও নেই স্যার। বলেই পকেট থেকে একটা পদত্যাগপত্র বের করে সামনের টেবিলের উপর রেখে তিনি বললেন,
-আমার এই পদত্যাগপত্রের Official copy through proper channel শীঘ্রই আপনার কাছে পৌঁছাবে। তার এধরণের আকস্মিক উপস্থাপনায় কিছুটা বিব্রত হয়েই শেখ সাহেব বললেন,
-তোমরা সবকিছুই একতরফাভাবে দেখ। আমার দিকটা একটুও চিন্তা কর না। একদিকে আমার পার্টি আর অন্যদিকে ওরা। আমি কি করুম? পার্টির কাছে আমি বানধা। পার্টি ছাড়াতো আমার চলব না। তারপর আমার দিকে ফিরে বললেন,
-তুই আর নূর কাইল আমার সাথে রাইতে বাসায় দেখা করবি।
শেখ সাহেবের সাথে কথা বলার সময় হুদা ভাইয়ের চোখে পানি এসে গিয়েছিল। পরদিন জেনারেল শফিউল্লাহর অফিসে আমার ডাক পড়ল। চীফ আমাকে নির্দেশ দিলেন কুমিল্লায় আমার আর ফিরে যাওয়া চলবে না। নিম্মীকে পাঠিয়ে জিনিষপত্র সব নিয়ে আসার বন্দোবস্ত করতে হবে। কর্নেল হুদা এই নির্দেশের জোর প্রতিবাদ করলেন। কিন্তু শফিউল্লাহ তার সিদ্ধান্ত বদলালেন না। কোন ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না তিনি। কুমিল্লায় ফিরে আমি যদি আবার কোন অঘটন ঘটিয়ে বসি! এভাবেই মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে স্বাধীনতার পর যে আর্মি গঠন প্রক্রিয়ায় অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলাম রাতদিন; সেই আর্মি থেকে স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী বিদায় নেয়ার সৌভাগ্য থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছিল আমাকে। একজন সৈনিকের জন্য এই অবমাননা সহ্য করা খুবই কষ্টকর। আমি ঢাকায় রয়ে গেলাম। হুদা ভাই নিম্মী ও খালাম্মাকে নিয়ে ফিরে গেলেন কুমিল্লায়।

আমাকে কুমিল্লায় ফিরতে না দেয়ায় অফিসার এবং সৈনিকরা অসন্তোষ ক্ষোভে ফেটে পড়ল। একদিন দুই ট্রাক সৈনিক কুমিল্লা থেকে আমাদের মালিবাগের বাসায় এসে হাজির। আমাকে ওরা নিয়ে যেতে এসেছে। সরকার অন্যায়ভাবে ক্ষমতাবলে আমাকে চাকুরিচ্যুত করেছে; তার উপর যে রেজিমেন্ট আমি শুরু থেকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছি সেই ইউনিটের তরফ থেকে আমাকে বিদায় সম্বর্ধনাও জানাতে পারবে না ইউনিটের সদস্যরা; সেটা কিছুতেই হতে দেবে না তারা। সব বাধা উপেক্ষা করে তারা আমাকে নিয়েই যাবে। পরিণামে যা কিছুই ঘটুক না কেন; তার মোকাবেলা করা হবে একত্রিতভাবে; সে সিদ্ধান্তই নেয়া হয়েছে ইউনিটে। Emotionally charged অবস্থায় পরিণামের বিষয়টি উপেক্ষা করে যে পদক্ষেপ তারা নিতে প্রস্তুত হয়েছে তার ফল তাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে সেটা তারা ঠিক বুঝতে না পারলেও আমি বুঝতে পারছিলাম। তাই অনেক কষ্টে সবাইকে বুঝিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। আমার যুক্তিগুলো মেনে নিয়ে অনেক ব্যাথা বুকে নিয়ে ফিরে গিয়েছিল তারা। ফিরে যাবার আগে আমার প্রিয় সহযোদ্ধারা বলেছিল, “স্যার আপনি যেখানেই থাকেন না কেন আমরা সবসময় আপনার সাথে আছি; একথাটা ভুলবেন না কখনো। প্রয়োজনে ডাক দিয়ে দেখবেন আমরা সব বাধা পেরিয়ে আপনার পাশে এসে দাড়াব।” একজন কমান্ডার হিসাবে অধিনস্ত সৈনিকদের কাছ থেকে এ ধরণের র্দুলভ সম্মান পাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। এর বেশি আর কি লাভ করা সম্ভব হত চাকুরিতে থাকলেও। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে পদভারে অনেক জেনারেল এবং কমান্ডার রয়েছেন ঠিকই কিন্তু তাদের কতজনের ভাগ্যে এধরণের শ্রদ্ধা এবং বিশ্বাস জুটেছে? আবেগ এবং আত্মতৃপ্তির অনাবিল আনন্দে সেদিন নিজেকে সামলে রাখতে পারিনি; খুশীর জোয়ার নেমে এসেছিল দু’চোখ বেয়ে। মনে হয়েছিল আমার সৈনিক জীবনের যবনিকাপাত অতি আকস্মিকভাবে ঘটানো হলেও স্বল্প পরিসরের এ জীবন আমার সার্থক হয়েছে। শুধু কুমিল্লা থেকেই নয়; দেশের বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্ট থেকেও অফিসর-সৈনিকরা সুযোগ-সুবিধামত আসতে থাকলো সমবেদনা জানাবার জন্য। সবার একই আক্ষেপ,কেন এমন অবিচার; এতবড় অন্যায়??? জবাবে সবাইকে বলেছি, “স্বৈরাচারী সরকারের পক্ষে সবকিছুই সম্ভব। তারা ক্ষমতার দম্ভে ভুলে যায় ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়; প্রকৃতপক্ষে মানুষের নিজের হাতে কোন ক্ষমতাই নেই। আল্লাহতা’য়ালাই সব ক্ষমতার অধিকারী। তার ইচ্ছাতেই যেকোন ব্যক্তি বিশেষ ক্ষমতা লাভ করে থাকে কিন্তু তার দেয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করলে তিনিই আবার শাস্তিস্বরূপ সে ক্ষমতা কেড়ে নেন। সব অত্যাচারীর ক্ষেত্রে তেমনটিই ঘটেছে। আল্লাহ যা করেন তা ভালোর জন্যই করেন; এ ঈমানের জোর আমার আছে। আমি তোমাদের দোয়া চাই আর কিছুই নয়।”
ছোট দেশ আমাদের। সেনাবাহিনী আরো ছোট। এ সংগঠনে সবাই সবার খবর রাখে। প্রত্যেকটি অফিসার কে কি চরিত্রের; কার কতটুকু যোগ্যতা এসমস্ত খবরা-খবর সৈনিকরা রাখে। পদাধিকারে প্রাপ্য মর্য্যাদা তারা সবাইকেই দিয়ে থাকে নিয়মাফিক। কিন্তু তাদের মন জয় করা শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা লাভ করতে পেরেছে শুধুমাত্র পরীক্ষিত সৌভাগ্যবানরাই। নীতিগতভাবে পদাধিকার বলে যে সম্মান লাভ করা যায় তার চেয়ে অর্জিত সম্মানই আমার কাছে বেশি মূল্যবান; তাই চাকুরি জীবনে অধিনস্থ সবাইকে সে ধরণের সম্মানই অর্জন করার জন্য অনুপ্রানিত করার চেষ্টা করেছি সবসময়। আমার সে প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে।

হালে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা লন্ডন সফরকালে সেখানে রেডিওতে আমিনুল হক বাদশাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমার বাবা সেনাবাহিনী গড়েছিলেন বলেই মেজর’রা জেনারেল হতে পেরেছিলেন।” একটা গুরত্ত্বপূর্ণ কথা বলেছেন তিনি। এটা অতি সত্য কথা যে, মেজর থেকে যাদের জেনারেল বানানো হয়েছিল তাদের অনেকেরই জেনারেল হবার যোগ্যতা ছিল না। কিন্তু তবুও তাদের জেনারেল বানানো হয়েছিল। এর কারণ ছিল শেখ মুজিব চেয়েছিলেন অযোগ্য নেতৃত্বের অধিনে সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে রাখতে এবং ঐ সমস্ত অযোগ্য ‘খয়ের খাঁ’ টাইপের জেনারেলদের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে তার ঠেঙ্গারে বাহিনীতে পরিণত করতে। কিন্তু সেটা ছিল তার দিবাস্বপ্ন মাত্র। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক অংশের উপর ঐ সমস্ত ‘জী হুজুর!’ জেনারেলরা কোন প্রভাবই বিস্তার করতে সক্ষম হয়নি।

নিম্মী ও খালাম্মা গিয়েছিলেন কুমিল্লায়; সংসার গুটিয়ে আনতে। বাসার সব জিনিষপত্র ট্রাকে করে বাই রোড পাঠাবার বন্দোবস্ত করে তারা বাই এয়ার ঢাকায় ফিরবেন। হঠাৎ করেই ব্রিগেড গোয়েন্দা ইউনিট খবর পেলো কুমিল্লা বিমান বন্দর থেকে আওয়ামী লীগের গুন্ডারা নিম্মীকে কিডন্যাপ করার প্ল্যান করেছে। খবরটা পেয়েই কর্নেল হুদা কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলেন। নিরাপত্তার সব দায়িত্ব দেয়া হল ফার্ষ্ট ফিল্ড রেজিমেন্টের মেজর বজলুল হুদা এবং ক্যাপ্টেন হাইকে। কর্নেল হুদা নিজে তার ফ্ল্যাগ কারে নিম্মী এবং খালাম্মাকে সঙ্গে করে এয়ারর্পোটে এসে তাদের প্লেনে তুলে দিয়েছিলেন। প্লেন টেক অফ না করা পর্যন্ত তিনি এয়ারপোর্টে উপস্থিত ছিলেন। এভাবেই আমার আর্মি ক্যারিয়ারের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল।