মেজর ডালিম বাংলাদেশের ইতিহাসের না বলা সত্যকে জানুন

 

 

 
 
..ডালিম বলছি
..যা দেখেছি যা বুঝেছি যা করেছি
..জীবন বৃত্তান্ত
..সমসাময়িক ভাবনা
..প্রকাশিত বইসমগ্র
..কিছু কথা কিছু ব্যাথা
..ইংরেজী ভার্সন    
 

শেখ কামাল নিজেকে ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী বলে দাবি করলো!

 
   
 

বেসামরিক প্রশাসনের সাহায্যে আমরা তখনও ব্যস্ত। একরাতে হঠাৎ করে শেখ কামাল, সাহান এবং তারেক এসে উপস্থিত আমার কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসায়। সাহান ও তারেক ছিল কামালের বিশেষ ঘনিষ্ট বন্ধু।

 

কিছুদিন পর হঠাৎ একদিন বেশ রাত করেই শেখ কামাল, সাহান এবং তারেক কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে আমার বাসায় এসে হাজির। রাত তখন প্রায় ১১টা বাজে। এতরাতে কোন খবর না দিয়ে ওদের আগমণে কিছুটা আশ্চর্য হয়েছিলাম।

-কি ব্যাপার কামাল। তোমরা এত রাতে এখানে ? প্রশ্ন করলাম।

-বস সরি! কিন্তু উপায় নাই। রাতটা আপনার বাসায় নিরাপদে কাটাবো বলেই এলাম। সকালে এসেছি পার্টির কাজে। সারাদিন ব্যস্ত ছিলাম শহরে। খবর দেবার সময়ও পাইনি। কিছুক্ষণ আগে কাজ শেষ হল। দিনকাল খারাপ তাই ভাবলাম শহরে না থেকে আপনার কাছে চলে আসি।

-তা বেশ করেছো। শহরেতো আজ গোলাগুলিও হয়েছে শুনলাম।

-না বস। গোলাগুলি না; এই একটু রংবাজী আর কি! জানাল কামাল। এরি মধ্যে নিম্মী খাবারের বন্দোবস্ত করে এসে বলল,

-সবার মুখ দেখে বোঝাই যাচ্ছে কারোই খাওয়া হয়নি, এসো খেয়ে নাও; তারপর কথা বলার জন্য সারারাত পড়ে আছে।

-নিম্মী You are really great বলল কামাল। সবাই হাতমুখ ধুয়ে খেতে বসে গেল। এরা তিনজনেই বিশেষভাবে পরিচিত এবং আপনজন। খাওয়ার মাঝেই সাহান বলে উঠল,
-ডালিম ভাই কামাল বিয়ে করছে।
-তাই নাকি! তা হঠাৎ করে বিয়ে কি বিষয়?
-না মানে, সবাই ধরছে; না করে আর উপায় কি বস ? রাজি হতেই হল।
-এত খুবই সুখবর। তা তোমার স্কলারশীপের কি হল? সস্ত্রীক যাচ্ছ নাকি? জানতে চাইলাম আমি।
-যাওন যাইবো না বস। পড়ালেখা করার সময় নাই। এরপর কামাল র্শাটের কলারের একপ্রান্ত আঙ্গুল দিয়ে নাড়িয়ে বেশ একটু গর্বের সাথেই বলল,
- Future Prime Minister বুঝতেইতো পারেন কত কাম। একদম সময় নাই।
-সেটাতো বুঝতেই পারছি; কিন্তু There is no short cut to knowledge. মাত্রতো ২-৪ বছরের ব্যাপার ছিল। লেখাপড়াটা সেরে আসলে ভবিষ্যতে একজন Educated Prime Minister পেতাম। This is my only interest nothing else. তাই বলা আর কি। তাছাড়া আগামী দু’চার বছরেতো চাচা রিটায়ার করছেন না; সেক্ষেত্রে স্কলারশীপটা avail করলেই পারতে। দেখ কামাল, চাচা বলেন তিনি প্রায় সর্বমোট ১৭ বছর জেল খেটেছেন পাক আমলে। জেলে থাকাকালীন অবস্থায় পৃথিবীর প্রায় সব নামি-দামী নেতারা বিস্তর লেখাপড়া করেছেন। আমাদের ঢাকা সেন্ট্রাল জেলের লাইব্রেরীটাও শুনেছি খুবই rich. জেলে থাকাকালীন সময়টার যথাযধ সদব্যবহার করে চাচা কিন্তু তেমন একটা লেখাপড়া করেননি। সময়টাকে কাজে লাগালে আজ তারই অনেক সুবিধা হত রাষ্ট্র পরিচালনা করতে। কি কথাটা ঠিক বললাম কি না? ওরা সবাই আমার কথা শুনছিল আর খাচ্ছিল। কামাল কিংবা অন্যদের কেউ কোন উত্তর দিল না। আমার কথাগুলো সম্ভবত ওদের মনঃপুত হয়নি। খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হালকা আলাপ করে সবাই শুয়ে পড়েছিলাম। পরদিন নাস্তার পর ওরা ঢাকায় ফেরার জন্য রওনা হয়ে গেল।